আবার ঘটলো ভয়াবহ শিশু নির্যাতন

প্রকাশঃ জুলাই ২৩, ২০১৫ সময়ঃ ৮:৪০ অপরাহ্ণ.. সর্বশেষ সম্পাদনাঃ ৮:৪০ অপরাহ্ণ

জেলা প্রতিবেদক

SSIISSUUশিশু রাজন হত্যার পর আবারও ঘটল শিশু নির্যাতনের ঘটনা। এবার সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার জয়নগর পল্লীতে ঘটেছে এই জঘন্য কাজ। রাস্তায় কাঁদা করার অপরাধে নির্মম নির্যাতনের শিকার হতে হয়েছে দুই শিশুকে। এরই মধ্যে নির্যাতনকারী সন্দেহে গোলাম মোস্তফা নামক একজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে জানা যায়। দুই শিশুকে নির্যাতনের একটি ছবিও প্রকাশ করা হয়েছে জানা গেছে।

পায়ে চলাচলের রাস্তায় কাঁদা করার অপরাধে স্থানীয় এমরান আলী মোড়লের ছেলে গোলাম মোস্তফা ১৬ জুলাই সকাল সাতটার দিকে ইয়াছিন (৮) ও নাছিম (৯) নামের দুই শিশুকে আটক করে। শুরুতে দু’জনকে পায়ে লোহার শিঁকল দিয়ে বেঁধে বাড়ির ভেতরে তাদের নিয়ে ফেলা হয়। পরে মোস্তফা একটি দড়ি নিয়ে তাদের হাতও গাছের সঙ্গে বেঁধে রাখেন। সেই সাথে ওই দুই শিশুর পুরো গা জুড়ে পেঁচিয়ে দেয়া হয় দড়ি। জয়নগরে গোলাম মোস্তফা মোড়লের বাড়িতে যাতায়াতের জন্য সরকারি সড়কে ইউনিয়ন পরিষদের পক্ষ থেকে সম্প্রতি মাটি ফেলা হয়। বৃষ্টিতে নষ্ট হয়ে যাবে—এ অজুহাতে গোলাম মোস্তফা ওই সড়কে খেজুরের কাঁটা দিয়ে বেড়া দেন। ১৬ জুলাই সকাল সাড়ে ছয়টার দিকে নাছিম ও ইয়াছিন ওই সড়ক দিয়ে যাওয়ার সময় খেজুরের কাঁটা তাদের গায়ে লাগে। এরপর তারা ওই বেড়া তুলে ফেলে দেয়। এতে গোলাম মোস্তফা ক্ষিপ্ত হয়ে তাদের একটি গাছের সঙ্গে বেঁধে রাখেন। সকাল সাতটা থেকে দুপুর সাড়ে ১২টা পর্যন্ত তাদের বেঁধে রাখা হয়। এ সময় পানি তারা চাইলেও তাদের পানি দেওয়া হয়নি। দুই শিশুর অভিযোগ পানি খেতে চাইলে পচা শামুক তাদের মুখের মধ্যে ভরে দেওয়া হয়। তাদের মারধরও করা হয়। তবে শিশুদের বেঁধে রাখলেও তাদের মারধর করেননি বলে দাবি করেছেন মোস্তফা। অনেকক্ষণ ধরে শিশুদের কোন খোঁজ না পেয়ে প্রতিবেশীদের মাধ্যমে বিষয়টি জানতে পারে তাদের পরিবার। শিশুদের স্বজনদের দাবি, গোলাম মোস্তফার বাড়িতে যেয়ে ঐ দৃশ্য দেখে দুই শিশুকে ছেড়ে দেয়ার জন্য তারা গোলাম মোস্তফার কাছে অনেক অনুনয় বিনয় করেন। সে অনুনয়ে সাড়া না দিয়ে তাদেরকে বেলা সাড়ে বারোটা পর্যন্ত একইভাবে বেঁধে রাখেন মোস্তফা। পরে পরিবারের সদস্যদের অনুরোধের প্রেক্ষিতে আটক দুই শিশুকে শুকনো সাগু খেতে দেয়া হয়। এক পর্যায়ে পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে খারাপ আচরণ করে ইয়াছিন ও নাছিমকে ছেড়ে দেয়া হয়। গোলাম মোস্তফা পরবর্তীতে নিজেরাই বিষয়টি স্থানীয়ভাবে মিটমাট করে নেয়ার জন্য নির্যাতিত শিশুদের পরিবারকে অনুরোধ করেন। কিন্তু ৩/৪ দিনেও বিষয়টি নিস্পত্তি না হলে লোকমুখে বিষয়টি জানাজানি হয়ে যায়। শিশু নাছিমের বাবা আবদুল হামিদের মামলার প্রেক্ষিতে বুধবার বেলা সাড়ে ১২টার দিকে গোলাম মোস্তফাকে আটক করে পুলিশ।

প্রতিক্ষণ/এডি/তাফসির

আরো সংবাদঃ

মন্তব্য করুনঃ

পাঠকের মন্তব্য

20G